| |
               

মূল পাতা বিশেষ প্রতিবেদন লতা সমাদ্দারসহ ১৭ শোবিজ তারকার বিরুদ্ধে মামলা করলেন নাজমুল : কী ঘটেছিল টিপকাণ্ডে?


লতা সমাদ্দারসহ ১৭ শোবিজ তারকার বিরুদ্ধে মামলা করলেন নাজমুল : কী ঘটেছিল টিপকাণ্ডে?


শেখ আশরাফুল ইসলাম     18 April, 2025     01:18 PM    


২০২২ সালের ২ এপ্রিল রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার বহুল আলোচিত টিপকাণ্ডের ঘটনায় চাকরি হারিয়েছিলেন পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেক। চাকরি ফিরে পেতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছিলেন তিনি। তবুও চাকরি ফেরত পায়নি নাজমুল তারেক। এই ঘটনায় আগুনে ঘি ঢালার মতো ভূমিকা রেখেছিলো লতা সমাদ্দারের স্বামী ও শোবিজ অঙ্গনের ১৬ জন তারকার বিতর্কিত প্রতিবাদ। ঘটনার তদন্ত হওয়ার আগেই অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রি কপালে বড় আকারের টিপ পড়ে প্রতিবাদ জানায়। 

এবার সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তেজগাঁও কলেজের শিক্ষিকা ড. লতা সমাদ্দার ও তার স্বামীসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন চাকরি হারানো সেই কনস্টেবল নাজমুল তারেক।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকার চিফ ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তিনি মামলাটি করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে শের ই বাংলা নগর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

এই মামলায় লতা সমাদ্দার ও তার স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মলয় মালা ছাড়াও নাট্য অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন, সুবর্ণা মোস্তফা, সাজু খাদেম, প্রাণ রায়, সায়মন সাদিক, মনোজ প্রামাণিক, স্বাধীন খসরু, চয়নিকা চৌধুরী, আশনা হাবিব ভাবনা, জ্যোতিকা জ্যোতি, উর্মিলা শ্রাবন্তী কর, দেবী সান, নাজনীন নাহার চুমকি, সুষমা সরকার ও কুসুম সিকদারসহ শোবিজের আরও বেশ-কয়েকজন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২২ সালে টিপ পরা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদের সময় এসব তারকারা ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশের মানহানি ঘটিয়েছেন। তারা সামাজিক মাধ্যমে ছবি ও বক্তব্য দিয়ে নাজমুল তারেকের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন, যার ফলে তার পেশাগত ও সামাজিক জীবনে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। 

লতা সামাদ্দারের দাবি

লতা সমাদ্দার সেসময় দাবি করেছিলেন, তিনি কলেজের পাশে হয়রানির শিকার হন। পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তি ‘টিপ পরছোস কেন’ বলে তাকে কটূক্তি করা হয়।

এছাড়া ওই সময় পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেকের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় অভিযোগ দেন লতা সমাদ্দর। যার জেরে চাকরি হারান পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল। পরে তিনি চাকরি ফেরত চেয়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন, যা এখন তদন্তাধীন পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর চাকরি ফিরে পেতে পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছেও আবেদন করেছেন তিনি।

নাজমুল তারেকের অভিযোগ :

তবে লতা সামাদ্দারের ওই অভিযোগকে অস্বীকার করে ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে স্ত্রী ও শিশুসন্তানের উপস্থিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল তারেক বলেন,  আমি ভুক্তভোগী। চাকরিরত অবস্থায় ছিলাম। এ জন্য কথা বলতে পারিনি। ঘটনায় কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নাজমুল অভিযোগ করেন, ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ পর্যবেক্ষণ না করে বিচার করা হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মনগড়া প্রতিবেদন দিয়েছেন। তিনি নির্দোষ। কারণ, সুস্পষ্ট তথ্য ও প্রমাণ তাঁরা দেখাতে পারেননি। নিম্নপদস্থ কর্মী হওয়ায় তিনি কথা বলতে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, চাকরিতে থাকার সুযোগে এবং আমার দাড়ি–টুপির কারণে আমাকে মৌলবাদী বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

বরখাস্ত হওয়া এই পুলিশ সদস্য বলেন, আমি তো কোনো এলিয়েন না। টিপ প্রথম দেখেছি, এমন বিষয় না যে টিপ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করব। উনি কি আসলেই পরিকল্পিতভাবে কোনো সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরি করতে চাচ্ছিলেন। আমি ট্রাফিক আইন ভেঙেছি, ট্রাফিক আইনে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হতে পারে। কিন্তু চাকরি চলে যেতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে নাজমুলের স্ত্রী মাইশা আক্তার বলেন, খাওয়া নাই, দাওয়া নাই। আমরা দিনের পর দিন প্রেসক্লাবে অবস্থান করেছি। আমার স্বামী যদি অপরাধী হয়। তার সর্বোচ্চ শাস্তি হোক। কিন্তু সত্য প্রকাশ না করে আমাদের সাত–আটজনের পরিবারকে পথে বসিয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা চাই, সত্য সামনে আসুক। ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ প্রকাশ করা হোক।